শেরপুরে গরু মোটাতাজা করন করে সফল খামারী শামীম
“মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু”
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কি.মি দূরে সুঘাট ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী জয়লা জোয়ান গ্রামের একজন সফল খামারী জাহাঙ্গীর আলম শামীম। (বয়স ৪৫বছর) বাবা মোঃ আজিজুল হক, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক। বড়ভাই ঢাকাতে ব্যবসায়িক কাজে সেটেল্ড। বাবা মায়ের অনুরোধেই ডিগ্রি পাশ করেও গ্রামে থেকে যান এবং সংসারের দায়িত্ব নেন।
জানাযায় সংসারের দ্বায়িত্ব নেওয়ার পরে খামারী জাহাঙ্গীর আলম শামীম ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে শখের বশে ১০ টি ষাঁড় নিয়ে শুরু করেন গরু মোটাতাজা করন প্রকল্প। প্রথম বারেই ৭ মাস গরু গুলো লালন-পালন করে দেখতে পান বড় রকমের লাভের মুখ। ৫৫-৬০ হাজার টাকা মুল্যমানের ১০ টি গরু থেকে ৭ মাস পর লাভ পান প্রায় ৪ লাখ টাকা। সেখান থেকে শুরু হয় সফলতার গল্প। শেরপুর উপজেলা প্রানিসম্পদ দপ্তরের কারিগরি সহায়তায় পেয়ে যান এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে গরুর সংখ্যা এবং লাভের অংক। গত কোরবানি ঈদের আগে খামারী জাহাঙ্গীর আলম শামীম এর মোটাতাজা গরুর সংখ্যা ছিল ৫৫ টি। গড়ে সাত মাস গরু গুলো লালন-পালনের পর এবারের ঈদে বিক্রি করেছেন ৬০ লাখ টাকা। তিনি জানান ক্রয়মুল্য এবং খাদ্য সহ অন্যান্য খরচ বাবদ মোট ব্যয় হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। শ্রমিকের মজুরি বাবদ খরচ প্রায় ৩ লাখ টাকা সহ মোট ৪৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। লাভ হয়েছে সাকুল্যে ১৫ লাখ টাকা। খামারী জাহাঙ্গীর আলম শামীম জানান ঈদের পরে পুনরায় ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন ৬৫ টি ষাঁড় গরু। দুধ খাওয়ার জন্য রয়েছে বাছুর সহ একটি ভালো জাতের গাভী। তিনি আরো জানান প্রাণিসম্পদ বিভাগের কারিগরি সাপোর্ট পেলে তিনি গরুর সংখ্যা বাড়িয়ে করবেন ২০০ টি। তিনি আগাচ্ছেনও সেভাবেই, ইতিমধ্যে নতুন করে গরুর সেড নির্মানের কাজ শুরু করেছেন। নিজের সফলতার পাশাপাশি তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অদম্য গতিতে। সফল এই মানুষটি জানান গত ৫ বছরে তিনি প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করেছেন এবং প্রতিবছর তিনি ৪-৫ লাখ টাকার জমি ক্রয় করেন। বর্তমানে তার খামারের দেখাশুনার জন্য রয়েছে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনের ৫ জন কর্মচারী রয়েছে। তিনি তার খামারের গরুগুলোকে নিয়মিত টিকা প্রদান করেন এবং সময়মত কৃমিনাশক খাওয়ান।
শেরপুর উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আমির হামজা জানান পাশ্ববর্তী উপজেলায় চাকুরি করার সুবাদে প্রায় ২ বছর আগে থেকেই ওনার খামারে কিছুটা পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তার গরুর খামার পরিদর্শন কালে ওনাকে এতটুকু আশ্বস্ত করতে পেরেছি, যে শেরপুর উপজেলা প্রানিসম্পদ বিভাগ সব সময়ই তার পাশে থেকে সাধ্য অনুযায়ী তাকে সহযোগিতা করবে।