আবরারের গ্রামের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি উপাচার্য
শেরপুর ডেস্ক: গ্রামবাসীর বাধার মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নিহত ছাত্র আবরার ফাহাদের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। ফলে আবরারের বাড়ির সামনে থেকেই ফিরে যেতে হয় উপাচার্যকে। এ সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধাওয়াধাওয়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আবরারের ভাই ও এক ভাবি সহ তিনজন আহত হন।
বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আবরারের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বিপুলসংখ্যক র্যাব ও পুলিশের উপস্থিতিতে গ্রামে পৌঁছে বুয়েট উপাচার্য আবরারের কবর জিয়ারত করতে যান। সে সময় তিনি সেখানে আবরারের দাদা গফুর বিশ্বাস, বাবা বরকতউল্লা ও একমাত্র ছোট ভাই ফায়াজকে সামনে পেয়ে তাঁদের জড়িয়ে ধরে সান্তনা দেন। এরপর ভিসি তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কবর জিয়ারত করেন।
কবর জিয়ারত শেষে কবরস্থান থেকে বের হওয়ার সময় প্রথম বাধার মুখে পড়েন বুয়েট উপাচার্য। এ সময় আবরারের ছোট ভাই সহ অনেকে উপাচার্যকে প্রশ্ন করতে থাকেন, ‘আপনি কেমন ভিসি যে আপনার একজন ছাত্রকে মেরে ফেলল, আপনি তাকে দেখতে যেতে পারলেন না? আপনি কেমন ভিসি যে তার জানাজায় যেতে পারলেন না? আপনি কেমন ভিসি যে আপনার একজন ছাত্রের নিরাপত্তা দিতে পারলেন না? আর আজ এসেছেন লোক দেখানো কবর জিয়ারত করতে?’
প্রশ্নের মুখে পড়ে উপাচার্য কারণ ব্যাখ্যা করতে লাগলে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় পুলিশ, র্যাব ও ডিবির সদস্যরা তাঁকে কর্ডন করে আবরারের বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। কিছুণের মধ্যে উপাচার্য আবরারের বাড়ির সামনের সড়কে আসেন। তখন শত শত নারী-পুরুষ উপাচার্যের সামনে আবরার হত্যার বিচার ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিােভ শুরু করলে সেখানে পুলিশ সদস্যরা তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন ও পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাতকে সঙ্গে নিয়ে উপাচার্য সাইফুল ইসলাম আবরারের বাড়িতে ঢুকতে না পেরে কুষ্টিয়া শহরের উদ্দেশে ফিরে যান। এ সময় গ্রামের এক নারী ভিসির গাড়ির সামনে শুয়ে পড়লে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে চ্যাং দোলা করে তুলে রাস্তার পাশে ফেলে দিলে তিনি আবারও উঠে পেছনে পুলিশ সুপারের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। তখন নারী পুলিশ সদস্যরা তাঁকে ধরে মারতে শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় কয়েক দফা বাঁশ, কাঠ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়াধাওয়িতে লিপ্ত হয় গ্রামবাসী। এ সংঘর্ষের একপর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারী, আবরারের ফুপাতো ভাইয়ের স্ত্রী ও আবরারের ছোট ভাই সামান্য আহত হন।