শেরপুর উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম নেই
নাহিদ আল মালেকঃ জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষন ও প্রসারের মাধ্যমে সকল মানুষের জন্য শিল্প সংস্কৃতির প্রবাহ তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয়ে সারাদেশে যখন শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম প্রসারিত হয়েছে তখন বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় কার্যক্রম নেই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর। যার ফলে হতাশ শিল্প-কলাকুশলী ও সংস্কৃতজনেরা।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় শিল্প-সংস্কৃতির সমৃদ্ধ ঐতিহ্য থাকলেও দীর্ঘদিন ঢিমেতালে চলার পর বর্তমানে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ায় ক্ষােভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মীরা। বর্তমানে শেরপুর উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর কোন কার্যক্রমই নেই। দীর্ঘদিন হলো একাডেমীর কোন অফিস নেই। সাইনবোর্ড খুলে রাখা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে প্রায় ৬ মাস। তাছাড়া জাতীয়সহ বিভিন্ন দিবসও পালিত হচ্ছে না।
যার ফলে সাং®কৃতিক ঐতিহ্য থাকলেও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমে শিল্প ও সংস্কৃতির চর্চার সুযোগ পাচ্ছে না নতুন প্রজন্ম। বর্তমানে অর্থ বরাদ্দ না থাকলেও স্থানীয়ভাবে শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমে প্রশিক্ষক নিয়োগ করে শাস্ত্রীয় সংগীত, সাধারণ সংগীত,শাস্ত্রীয় নৃত্য,সাধারণ (সৃজনশীল) নৃত্য, নাটক/আবৃত্তি, চারুকলা, তালবাদ্যযন্ত্র (তবলা) ও দেশীয় বাদ্যযন্ত্র এ ৮টি বিষয়ে নতুন শিল্পীদের প্রশিক্ষণ দেবার কথা। কিন্তু বগুড়ার শেরপুরে প্রশিক্ষণতো দুরের কথা শিল্পকলা একাডেমীর স্বাভাবিক কোন কার্যক্রমই চোখে পড়ে না। স্থানীয় সংস্কৃতিমনারা এর সদস্য পর্যন্ত হতে পারে নি। নামে মাত্র একটি এডহক কমিটির মাধ্যমে চলছে এর কার্যক্রম। তাও ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল কাইয়ুম অন্যত্র বদলি হওয়ায় বর্তমানে কোন কার্যক্রমই নেই। উপজেলা অফিসার্স কাবের একটি ঘরে শিল্পকলা একাডেমীর জন্য বরাদ্দ করা হলেও এতে কোন কার্যক্রম হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলার সংগীত প্রশিক্ষক ওস্তাদ আবুল কাশেম জানান, দীর্ঘদিন যাবত উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বন্ধ রয়েছে। এর শিল্প যন্ত্রাংশগুলোরও কোন হদিস নেই।
উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য প্রবীন সাংবাদিক মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু জানান, শেরপুর উপজেলার রয়েছে শিল্প ও সংস্কৃতিতে গৌরবময় ঐতিহ্য। অথছ শেরপুর উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমীর কাংখিত কাযক্রম নেই। নতুন প্রজন্মকে শিল্পকলা একাডেমীর সুযোগ সুবিধা দিয়ে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এটি চালু করা প্রয়োজন।
বগুড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার মো. শাহাদত হোসেন জানান, উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমী গুলো স্থানীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহ করে প্রশিণ কার্যক্রম, সদস্য সংগ্রহ ও অন্যান্য রুটিন কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কিছু কিছু উপজেলায় এগুলো ঢিমেতালে চলছে। সেগুলোতে কার্যক্রম জোরদার করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লিয়াকত আলী সেখ এ ব্যাপারে জানান, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর ওই রকম কমিটি নেই। এটি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। কার্যক্রম চলছে। পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে আগামী জানুয়ারী থেকে এর কার্যক্রম শুরু হবে।