পরিবহন আইন, যে অপরাধে যে শাস্তি
শেরপুর ডেস্ক: আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হচ্ছে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’। প্রণয়নের এক বছরেরও বেশি সময় পর আইনটি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে এতদিন আইনটি বাস্তবায়নে যায়নি সরকার। গত ২২ অক্টোবর আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গেজেট জারি করে সরকার। নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
মোটরযান মালিক, মোটরযান শ্রমিক, পথচারী সহ সকল অংশীজনকে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর একাদশ অধ্যায়ে বর্ণিত অপরাধ, বিচার ও দন্ডের বিষয় গুলো জেনে তা মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপ (বিআরটিএ)।
আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও জরিমানা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধের জন্য জেল-জরিমানার সঙ্গে চালকের পয়েন্ট কাটা হবে।
অপরাধ, বিচার ও দন্ড
ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান ও গণপরিবহন চালনার বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ৪ এবং ৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪ এবং ৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স হস্তান্তর সংক্রান্ত ধারা ৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৫) এর বিধান লঙ্ঘন করেন এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন।
বিদেশি নাগরিকের এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান বা লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্ত অমান্য সংক্রান্ড ধারা ৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো বিদেশি নাগরিক ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন।
কর্তৃপ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান বা নবায়নে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১০ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১০ এর বিধান লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ দুই বছর তবে কমপে ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা তবে কমপে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোটরযান চালানোর ওপর বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১২ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১২ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
কন্ডাক্টর লাইসেন্স ছাড়া কোনো গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন সংক্রান্ড ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন।
মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালনা সংক্রান্ড ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার ও প্রদর্শনে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ড ধারা ১৭ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৭ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ দুই বছর তবে কমপে ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা তবে কমপে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
মোটরযানের ফিটনেস সনদ ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে বা ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ট্যাক্স-টোকেন ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স-টোকেন ব্যবহার করে মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন।
রুট পারমিট ছাড়া পাবলিক প্লেসে পরিবহন যান ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ২৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৮ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন ও নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৪ এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং চালকের েেত্র অতিরিক্ত হিসেবে দোষ সূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।
কর্তৃপরে নির্ধারিত কোনো মোটরযানের কারিগরি বিনির্দেশ অমান্য সংক্রান্ত ধারা ৪০ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৪০ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড তবে কমপে এক বছর বা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।