জেলার খবর

বগুড়ায় অনুমোদন ছাড়াই চলছে দেড়শ’ ইটভাটা

Spread the love

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটভাটা। এসব ভাটাগুলো জমি, বসতবাড়ি, শিাপ্রতিষ্ঠান, বনাঞ্চল ও পাকা সড়কের পাশে অবস্থিত। এতে ব্যবহার হচ্ছে জমির টপসয়েল ও খড়ি। ভাটায় পরিবেশবান্ধব চুল্লি নেই। সেখান থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া লোকালয়ে চলে আসছে। এতে পরিবেশ দূষণ ও ফসলি জমির ব্যাপক তি হচ্ছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, জেলায় মোট ইটভাটার সংখ্যা ২১৯টি। এরমধ্যে মাত্র ৭৪ টির লাইসেন্স রয়েছে। তবে বেসরকারি হিসেবে ভাটার সংখ্যা আরও বেশি। এরমধ্যে ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভাটা রয়েছে প্রায় ৪০টি। অধিকাংশরই পরিবেশের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স নেই। শুধু মথুরাপুর ইউনিয়নে রয়েছে ১৫ টি ভাটা। যার ৮টি স্থাপন করা হয়েছে কুঁড়িগাঁতি গ্রামে। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই গত ২-৩ বছর ধরে কুড়িগাঁতি গ্রামে প্রগতি ব্রিকস, বস ব্রিকস, দিগন্ত ব্রিকস, বন্ধু ব্রিকস, ফাইভস্টার ব্রিকস, আদর্শ ব্রিকস, একতা ব্রিকস, গ্রামীণ ব্রিকস ও প্রগতি ব্রিকস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ২০১৩-এ বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা নির্মাণ, ইট প্রস্তুতে কৃষি জমি বা পাহাড় কেটে মাটি ব্যবহার করতে পারবে না। অনুমতি ছাড়া খাল, পুকুর, নদীরপাড় বা চরাঞ্চল কেটে মাটি সংগ্রহ করা যাবে না। এলজিইডির সড়ক ইট ও মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কোনও ধরনের কাঠ পোড়ানো যাবে না। মানসম্পন্ন কয়লা পোড়াতে হবে। অথচ নিয়মনীতি উপো করেই কৃষি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ভাটাগুলো। ভাটায় পরিবেশবান্ধব চুল্লি নেই। এসব ভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া লোকালয়ে চলে আসছে। এতে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।
মথুরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ সেলিম বলেন, কৃষিজমি নষ্ট করে ইটভাটা নির্মাণ হচ্ছে। আমার ইউনিয়নে অনেক বেশি ইটভাটা থাকায় ও জমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহার করায় কৃষিজমির ফলন কমে যাচ্ছে। এতে কৃষক সহ সাধারণ মানুষ তিগ্রস্ত হচ্ছেন।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ উপজেলায় অধিকাংশ ইটভাটা নিয়মনীতি মেনে নির্মাণ হয়নি। এ কারণে তাদের পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রের জন্য কৃষি অধিদফতর থেকে কোনও প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়নি। ইটভাটার কারণে কৃষি জমির অনেক তি হচ্ছে।
কুড়িগাঁতি গ্রামের প্রগতি ব্রিকস ইটভাটার মালিক মিজানুর রহমান ও বস ব্রিকস ভাটার মালিক কামরুল ইসলাম জানান, পবিবেশ অধিদফতরে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কেউই ছাড়পত্র ও লাইসেন্স পাননি।
এসব ভাটা কীভাবে চলছে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রতিটি ইটভাটা মালিক বছরে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির মাধ্যমে দিয়ে প্রশাসন সহ সব কিছু ম্যানেজ করা হয়।

ধুনট উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি হায়দার আলী হিন্দোল বলেন, ‘খাতা-কলমে এই উপজেলায় ২৪/২৫টি ইটভাটা রয়েছে। অনেকেই নতুন হওয়ায় হয়তো পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স পায়নি।’
ইটভাটা মালিকদের থেকে বার্ষিক টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রæয়ারি, ২৬ মার্চসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভাটা মালিকরা কিছু টাকা প্রশাসনকে দিয়ে থাকেন।’
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র সাপেে জেলা প্রশাসন লাইসেন্স দিয়ে থাকেন। জেলা প্রশাসক রিপোর্ট চাইলে তদন্ত করে তা দেওয়া হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য কেউ অনুমতি নিতে আসেনি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button
Close