শেরপুরে বন্ধ হবার উপক্রম ‘সততা ষ্টোর’
নাহিদ আল মালেকঃ ছাত্রছাত্রীদের মাঝে নৈতিকতা ও সততা দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করার ল্েয বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠানে বিক্রেতা বিহীন ‘সততা ষ্টোর’ চালু করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।
জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে তরুণ প্রজন্মের মাঝে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টি করা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির ল্েয শিা প্রতিষ্ঠানে ‘সততা সংঘ’ করার পাশাপাশি সততা ও নৈতিকতার চর্চার ল্েয উদ্যোগ নেয়া হয় বিক্রেতা বিহীন ‘সততা ষ্টোর’ করার। শিা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি স্থানীয়ভাবে পুঁিজ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট নিয়মে পণ্য ক্রয় বিক্রয় করবে যাতে করে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছোট বেলা থেকেই সততার অভ্যাস গড়ে উঠে। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ১০২ টি স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও ১৩৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই ‘সততা ষ্টোর’ স্থাপন করা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এই দোকান সর্ম্পকে শিক শিার্থীদের সচেতনতার অভাব ও ছাত্রছাত্রীদের সততার অভাবের কারণে সততা ষ্টোরের মহৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে।
বিক্রেতাবিহীন ষ্টোর চালুর কিছুদিনের মধ্যেই অধিকাংশ সততা ষ্টোর বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের হাপুনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা গেছে দোতালার একটি ঘরে সততা ষ্টোরের সাইনবোর্ড থাকলেও সেটি তালাবদ্ধ। ঘরে প্রবেশ করে দেখা গেছে শোকেজে কোন মালামাল নেই। মাদ্রাসার সুপার আকরাম হোসেন জানান, সততা ষ্টোরটি ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। এর কিছুদিন পর আর চালু করা সম্ভব হয়নি। অর্থ সংকটের কারণে বর্তমানে ষ্টোরটি বন্ধ আছে। অবশ্য এটি আবারও চালু করা হবে বলে তিনি জানান।
শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বিশ্বা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক নজরুল ইসলাম জানান, ‘৫ হাজার টাকা দিয়ে সততা ষ্টোর চালু করেছিলাম। এখন ক্যাশে আছে ৩শ টাকা। ছাত্রছাত্রীরা অনেকে টাকার পরিবর্তে গাছের পাতাও দিয়ে যায়।’
খামারকান্দি ইউনিয়নের হুসনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক জানান, সততা ষ্টোর চালু হলেও এ সর্ম্পকে শিার্থীদের মাঝে ব্যাপকভাবে সচেতনতা নেই। ফলে সঠিকভাবে ষ্টোর চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক মো. আব্দুল মতিন জানান, টাকা ছাড়াই দোকানের পন্য নিয়ে যাওয়ায় ইতিপুর্বে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে শাসন করা হয়েছে। অনেকেই টাকা ছাড়াই জিনিসপত্র নিতে চায়। এটি রোধ করতে প্রয়োজন ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি।
উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ছাতিয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে ‘সততা ষ্টোরে পাহাড়া দিচ্ছেন বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী, যেন মালামাল চুরি না হয়। একই অবস্থা উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক,মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজেও। এসব প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র ‘সততা ষ্টোর’ স্থাপন করা হলেও সততা সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্যে ব্যাহত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের মাঝে সততা ও নৈতিকতা সৃষ্টির জন্য তাদের সচেতন করা ও নীতিমালা অনুযায়ী সততা ষ্টোর চালু করতে শিা প্রতিষ্ঠানে আরও সচেতনতামুলক কার্যক্রম হাতে নেয়া প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিা কর্মকর্তা শেখ নাজমুল ইসলাম জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের অর্থ সহায়তায় শেরপুরে ৪ টি প্রতিষ্ঠানে সততা ষ্টোর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বাকিরা স্ব উদ্যোগে ষ্টোর স্থাপন করেছে। সততা ষ্টোর গুলো সঠিকভাবে চালু আছে বলে তিনি দাবী করেন।