শেরপুরে পলিথিন থেকে তৈরী হচ্ছে জ্বালানী তেল
ষ্টাফ রির্পোটার: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শিবপুরে পলিথিন থেকে তৈরী হচ্ছে জ্বালানী তেল ডিজেল ও পেট্রোল। ইউটিউবে ভিডিও দেখে কয়েক মাসের চেষ্টায় নিজেরাই পরিত্যক্ত পলিথিন থেকে জ্বালানী তেল তৈরী করছেন কয়েক যুবক। প্রতিদিন এ তেল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে নাজমুল হক নাজু (২৫) এক বছর পুর্বে পলিথিন থেকে জ্বালানী তেল উৎপাদনের ভিডিও দেখে নিজে বাড়িতে চেষ্টা চালান। কয়েক মাসের চেষ্টায় সফল হবার পর স্থানীয় আরো ৪ যুবককে সাথে নিয়ে এখন নিয়মিত ডিজেল ও পেট্রোল তৈরী করছেন।
তিনি জানান, পরিত্যক্ত প্লাষ্টিকের বোতল কিংবা পলিথিন থেকে কেজি প্রতি ৬শ থেকে ৭ গ্রাম জ্বালানী তেল উৎপাদন সম্ভব। একটি বড় চুল্লিতে পলিথিন গ্যাসের তাপ দিয়ে কয়েক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ বের হয় যা পরিশোধনের মাধ্যমে ডিজেল ও পেট্রোল উৎপাদন করা হচ্ছে। এছাড়া অকটেন ও ব্যবহারযোগ্য কালিও উৎপাদন সম্ভব বলে তিনি জানান।
বর্তমানে ক্ষুদ্রাকারে কারখানাটিতে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ লিটার তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি জানান, প্রতি লিটার ডিজেল উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ২০ টাকা আর তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। কারখানাটি বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর গবেষকরা পরিদর্শন করেছেন। তারা এটি দ্রæত পরিবেশ বান্ধব করে ছড়িয়ে দেবার জন্য কারিগরী সহযোগিতা দিবেন বলে জানা গেছে। এখন কারখানাটি বড় করার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
প্রথমে শিবপুর গ্রামের নাজু ও তার মামা মুন্টু এর এ কাজ শুরু করলেও পরবর্তীতে যুক্ত হন লাল মিয়া, মোমিন ও ফারুক। বর্তমানে ৫ বেকার যুবক মিলেই তৈরী করছেন জ্বালানী তেল। ভবিষ্যতে ডিজেল পেট্রোল ছাড়াও অকটেন তৈরী করারও চিন্তাভাবনা তাদের রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের দাবী, পরিত্যক্ত বোতল কিংবা মোটা পলিথিন বর্জ্য থেকে যদি জ্বালানী তেল উৎপাদন করা হয় তবে তা যেমন জ্বালানীর ঘাটতি পুরন করবে তেমনি পরিবেশ দুষণ থেকেও আমাদের রক্ষা করবে। কিন্তু কারাখানাটি পরিবেশ এর জন্য হুমকি হচ্ছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই ভবিষ্যতে পরিবেশ বান্ধব কারখানা গড়ে তোলা হবে। বর্তমানে তাদের উৎপাদিত তেল শেরপুর ও শাজাহানপুর উপজেলা এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এভাবে জ্বালানী তেল উৎপাদনের দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই উৎসুক জনতা সেখানে ভীড় জমাচ্ছে।