গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ
শেরপুর ডেস্ক: প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনা দাবির মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এখন ২ হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গতকাল রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তিন মাসের মধ্যে
এ টাকা পরিশোধ না করলে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা আদায়ের ওপর হাইকোর্ট যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, তা বাতিল হয়ে যাবে বলেও আদেশ দেন আপিল বিভাগ। তবে বাকি টাকার ব্যাপারে কী হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগের আদেশের কপি পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
আদালতে গ্রামীণফোনের পে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে বিটিআরসির পে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আদেশের পর গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ২ হাজার কোটি টাকা না দিলে তিন মাস পর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয়ে যাবে। আমরা আদেশ পাওয়ার পরে কায়েন্টের সঙ্গে আলাপ করব, রিভিউ করব কিনা। তিন মাস সময় আছে। আর এক মাসের মধ্যে রিভিউ করার সুযোগ আছে।
বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব বলেন, বিটিআরসির যে পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা, এর মধ্যে তারা (গ্রামীণফোন) যদি ২ হাজার কোটি টাকা এখন না দেন তা হলে হাইকোর্ট থেকে যে নিষেধাজ্ঞা নিয়েছিল সেটা ভ্যাকেট (প্রত্যাহার) হয়ে যাবে। এর অর্থ হলো এখন গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। তারা যদি না দেয় তা হলে বিটিআরসি টাকা আদায়ে যে কোনো অ্যাকশন নিতে পারবে। আদেশের অনুলিপি পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এক প্রশ্নে বলেন, এটা তো ফাইনাল সেটেলমেন্ট না। এখন ২ হাজার কোটি টাকা দিলে পরে যদি দেখা যায় মামলায় বিটিআরসি আরও বেশি টাকা পায় তা হলে দেবে। সুতরাং আমরা আপাতত সন্তুষ্ট। আমরা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা চেয়েছি। এটা নিয়ে কোর্টে মামলা চলছে। হাইকোর্টেও আছে। ওই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পরে জানা যাবে বিটিআরসি আর টাকা পাবে কি পাবে না।
উল্লেখ্য, প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি (বিটিআরসির ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ও এনবিআরের ৪ হাজার ৮৬ কোটি) টাকা পাওনা দাবি করে গ্রামীণফোন লিমিটেডকে গত ২ এপ্রিল চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই পাওনা দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করেও পাওনা দাবির অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চায়। গত ২৮ আগস্ট ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর বিরুদ্ধে গ্রমীণফোনের পে ১৬ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। এর গ্রহণযোগ্যতার শুনানি নিয়ে ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং ওই অর্থ আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে। সেই আবেদনের ওপর গত ১৪ নভেম্বর শুনানি শেষ হয়। গতকাল আদেশ দেন আপিল বিভাগ।