‘দ্য ফাদার’ ছবিতে স্বরূপে বঙ্গবন্ধু
শেরপুর ডেস্ক: চার বছরের কঠোর পরিশ্রমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডিজিটাল পেইন্টিং (চিত্রকর্ম) আঁকতে সম হয়েছেন গ্রাফিক ডিজাইনার হাবিবুল্লাহ আল ইমরান শিহান। হাই রেজুলেশনে আঁকা ছবিটির শিরোনাম দিয়েছেন ‘দ্য ফাদার’। ইমরানের দাবি, উচ্চপ্রযুক্তির মাধ্যমে প্রস্তুত করা ছবিটি ১০ তলা ভবনের সমান বড় করলেও রেজুলেশন বিন্দুমাত্র কমবে না এবং ফাটবে না।
হাবিবুল্লাহ আল ইমরান জানান, সংরণ, সম্পাদন, প্রযুক্তিগত কিছু কারণে মূল ছবি থেকে রূপান্তর হয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবিগুলোর স্বরূপ হারিয়েছে। আর এ বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে রাজশাহীর এই তরুণ শিল্পীকে। ছবির প্রকৃত রূপ উদ্ধারে শুরু করে দেন গবেষণা। প্রায় ৫০ বছর আগে তোলা বিদেশি ফটোগ্রাফারদের আর্কাইভ থেকে বঙ্গবন্ধুর অনেক ছবি তিনি সংগ্রহ করেন। এর পর বঙ্গবন্ধুর পুরনো ছবি পর্যবেণ করে বর্তমান ছবির সঙ্গে অমিল দেখতে পান। ‘দ্য ফাদার’ পেইন্টিংয়ের কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সনদ বিশেষ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডান গালের তিল, দুই চোখ আর স্যুটের কাপড়ে পরিবর্তন ল করেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বরাবরই হাতাছাড়া কালো কোট পরতেন, যা ‘মুজিব কোট’ নামেই সবার কাছে পরিচিত। তবে অফিসিয়াল অনুষ্ঠানে গাঢ় নীলচে আর ফ্যাকাসে চেকের স্যুটে তাকে দেখা গেছে।’
সংরণ ও কালের বিবর্তনের কারণে ছবির অনেক নমুনা হারিয়ে গেছেÑ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডান গালে ছোট তিল ছিল। কিন্তু ছবি সম্পাদনার সময় সেই তিলকে ছোট নেগেটিভে ফিল্ম-স্পট হিসেবে মনে করে অনেকেই মুছে ফেলেছেন। এভাবে চোখ দুটির কনট্রাস্ট ধরে রাখতে গিয়ে বয়সের ভাঁজগুলো মুছে ফেলা হয়েছে।’
স্বাভাবিকভাবেই আগের ফিল্ম ক্যামেরা দিয়ে যে ডিটেইল নেওয়া হতো, তা বর্তমান ক্যামেরা বা টেকনোলজির সামনে খুবই অপ্রতুল। ধীরে ধীরে অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন হতে থাকে ফটোগ্রাফি প্রযুক্তিতে। এভাবে নতুন নতুন প্রযুক্তিতে ছবিকে ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে এর আসল রূপ হারিয়ে গেছে। গবেষণালব্ধ হাই রেজুলেশনের ‘দ্য ফাদার’ ছবিটিতে এই বিষয়গুলো প্রকৃত রূপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান হাবিবুল্লাহ আল ইমরান। ‘দ্য ফাদার’ পেইন্টিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট, শেষ হয় চলতি বছরের ১৭ মার্চ।
জাতির জনকের স্মৃতিকে আগামী প্রজন্মের হাতে নতুন করে তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ইমরান তার পেইন্টিংটি তুলে দিতে চান। গত ২৬ জুলাই গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকেও পেইন্টিংটি দেখিয়েছেন। ইমরান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দৃঢ়তা, ত্যাগ, বীরত্ব, দূরদর্শিতা আমাকে সব সময় মুগ্ধ করে। এই ডিজিটাল পেইন্টংয়ের নিখুঁত কাজ আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন জানতে উৎসাহিত করবে। তাই ছবিটির যথাযযোগ্য ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে আমি পেইন্টিংটি তুলে দিতে চাই। এটি দেখার পর অনেকে দাবি করছেন বঙ্গবন্ধুর মুখের ডান পাশে তিল ছিল না। প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে পারলে আমার গবেষণালব্ধ কাজটি সঠিক বলে প্রমাণিত হবে আশা করি। সেই সঙ্গে সামনের বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এটি অফিসিয়াল ছবি হিসেবে ব্যবহার হলে আমার এতদিনের পরিশ্রম সফল হবে।