শেরপুরে দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের অর্ধশতাধিক গাছ বিনা নিলামে কাটা হচ্ছে
ষ্টাফ রির্পোটার: বিনা নিলামে কাটা হচ্ছে বগুড়ার শেরপুরে দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের অর্ধশতাধিক গাছ। খামারের উপপরিচালক বলছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশে গাছগুলো কাটা হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রায় ৫৩ একর জায়গা নিয়ে ১৯৯৩ সালে গড়ে ওঠে বগুড়া জেলার একমাত্র এই দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামার। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকল্পের (সাসেক-২) আওতায় ঢাকা বগুড়া মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের ফলের খামারের পূর্ব অংশের ৮৫ শতাংশ জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। এর উত্তর-দক্ষিণ সীমানায় রয়েছে অর্ধশতাধিক গাছ। আইন অনুযায়ী গাছগুলোর মালিক খামার কর্তৃপক্ষ। এগুলো নিলামে বিক্রি করার কথা। তবে গাছগুলো কে কাটছেন তা জানা নেই কারও।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খামারের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সওজ বিভাগ খামারের জায়গা অধিগ্রহণ করেছে। আমি ঝামেলা এড়াতে কোনো টেন্ডার দিইনি। সওজ নিলামের মাধ্যমেই গাছগুলো বিক্রি করেছে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শুনেছি। তবে এ-সংক্রান্ত লিখিত কোনো কিছু পাইনি। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।’
খামারে গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আরিফুর রহমান নামের এক ব্যক্তি সাড়ে ৩ লাখ টাকায় গাছগুলো কিনেছেন। গাছগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ১২ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫টি গাছ কাটা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি, বেলজিয়াম ও মেহগনি।
আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো ঠিকাদার নই বা টেন্ডারের মাধ্যমে গাছও কিনিনি। শ্রমিক সরবরাহ করা আমার কাজ। বগুড়া জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আমি গাছ কাটার শ্রমিক সরবরাহ করেছি।’ শাহালম নামের সওজের এক প্রকৌশলী তাঁদের কাজ দেখাশোনা করেন বলে জানান আরিফুর। বগুড়া জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘রাস্তার পার্শ্বের গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এর জন্য আমাদের আলাদা একটা বিভাগ আছে।’ তথ্য যাচাইয়ের জন্য আসাদুজ্জামান সওজের রাজশাহী বিভাগীয় আরবরিকালচার অফিসে কথা বলার পরামর্শ দেন। যোগাযোগ করলে আরবরিকালচার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব কুন্ডু বলেন, ‘আমরা গাছ কাটার আগে নাম্বারিং করে নিলামে বিক্রি করে থাকি। শেরপুরের দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের গাছ নিলামে বিক্রির কথা আমার জানা নেই।’
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের মালিকানাধীন যেকোনো সম্পদ অপসারণের জন্য বিশেষ বিধিবিধান আছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।