হাসপাতালে খালেদা জিয়া রাজার হালেই আছেন : প্রধানমন্ত্রী
শেরপুর ডেস্ক: দুর্নীতিতে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী সহ হাসপাতালে ‘রাজার হালেই’ আছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলে দলের জাতীয় কমিটির বৈঠকে বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে তার দলের নেতারা যে দাবি করছেন সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেছেন, ‘তার অসুস্থতা, সেটা তো পুরানো। ৯১ সালে সরকারে এসে তার “নি” (হাঁটু) রিপ্লেস করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সৌদি আরবে আবার অপারেশন করা হয়।’
‘বিদেশে যাওয়ার পরে সে যখন শপিং করে তখন হুইল চেয়ারে শপিং করত, ফালু ঠেলত, আর সে গিয়ে শপিং করত। সে যখন হজ করে সেখানেও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলে সে হজ করে। হুইল চেয়ারে বসা সেটা নতুন কিছু নয়। এটাতো বহু যুগ ধরে দেখে আসছি’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী আছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। প্রথম দিন থেকেই কারাগারে তার সঙ্গে আছেন দীর্ঘদিনের গৃহ পরিচারিকা ফাতেমা বেগম। এরমধ্যে অসুস্থ হওয়ায় গত আট মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া।
সেখানে তার সুষ্ঠু চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ করে ৭৩ বছর বয়সী খালেদাকে ‘পঙ্গুত্ব’ থেকে রায় তার জামিনের দাবি জানাচ্ছেন বিএনপি নেতারা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খালেদার জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কর্তৃপরে কাছে খালেদার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদনও চেয়েছে আদালত। এদিনই দলীয় চেয়ারপারসনের জামিন হবে বলে আশাবাদী বিএনপির একাধিক নেতা তা না হলে নেত্রীকে মুক্ত করতে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া যে জেলে আছে, সে তো ভালো, রাজার হালেই আছে। জেলখানা থেকে এখন হাসপাতালে। তার জন্য আবার মেইড-সার্ভেন্ট দেওয়া হয়েছে। মানুষ এমনিতে কাজের বুয়া পায় না। আর খালেদা জিয়ার জন্য স্বেচ্ছায় একজন কারাবরণ করছে, তার সেবা করার জন্য। এতটুকু সুবিধা তাকে দেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের একটা কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে, সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত রেখেছি। এই সন্ত্রাসের গডমাদারই হচ্ছে খালেদা জিয়া। সে এই বাংলা ভাই সৃষ্টি থেকে শুরু করে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরে ফেলা, এর চেয়ে বড় সন্ত্রাসী কাজ তো হয় না। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা, এর চেয়ে বড় সন্ত্রাসী কাজ আর কি হতে পারে? ঠাণ্ডা মাথায় হরতাল অবরোধ ডেকে, যে অবরোধ এখনো তিনি তোলেননি।’
আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারা ‘অগ্নিসন্ত্রাসীরা’ যেন আর মতায় আসতে না পারে সেই আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে দেশ কোথায় নিয়ে যাব, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ হবে। ২১০০ সাল পর্যন্ত আমরা একটা ছক তৈরি করার পরিকল্পনা আমরা নিয়ে নিয়েছি। তারই ভিত্তিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করব।’