শেরপুরে আদিবাসী পল্লীতে হামলার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ
শেরপুর ডেস্ক: ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার বিচার ও ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল বগুড়ার শেরপুর। বুধবার (১৮জানুয়ারি) দিনভর জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বগুড়া জেলার শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ-সমাবেশ, মানববন্ধন ও ইউএনও’র কার্যালয় ঘেরাও এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল থেকেই শহরের পৌর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জমায়েত হতে থাকেন আদিবাসী পল্লীর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজন। পরে সেখানে আদিবাসী পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ সিংয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর উপজেলা পরিষদে গিয়ে ইউএনও’র কার্যালয় ঘেরাও করে বক্তব্য রাখেন। এসব কর্মসূচি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বগুড়া জেলা আদিবাসী পরিষদের সভাপতি সন্তোষ সিং ও সাধারণ সম্পাদক স্বপন কর্নী দাস স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি থেকে জানা যায়, বিগত ০৮জানুয়ারি উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গ্রামে আদিবাসী সন্তোষ সিংয়ের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি দখলে নিতে একই গ্রামের সোলায়মান আলীসহ তার লোকজন হামলা চালায়। পরবর্তীতে এই ঘটনার দুইদিন পর ১১জানুয়ারি সকালে গ্রামের মসজিদের মাইকযোগে প্রচার চালিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বেশকয়েকজন নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। বর্তমানে তারা বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই দুইদফা হামলার পর আদিবাসীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। ভয়াবহ আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। ফলে কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। তাই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা, ভূমি অধিকার নিশ্চিতকরণসহ স্বাভাবিক জীবন যাপনের দাবি জানানো হয় ওই স্মারকলিপিতে।
এদিকে ওই হামলায় আহতদের চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। একইদিন বেলা তিনটায় তাঁর নেতৃত্বে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লী হিসেবে পরিচিত আম্বইল গ্রাম পরিদর্শন করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। পরে সেখানে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় এই দাবি জানান তিনি। এসময় অন্যদের মধ্যে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারহা তানজিম তিতিল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. গজেন্দ্র নাথ মাহাতো, মানবাধিকার সংগঠন নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, অধ্যাপক আহসান হাবিব, প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেত্রী দীপায়ন খীসা, আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা আসলাম খান, জাহাঙ্গীর কবির তনু, শ্রীকান্ত মাহাতো, বগুড়া জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া এই প্রতিনিধি দলে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণীপেশার মানুষ।