বিএনপির নতুন কর্মসূচি: সমঝোতার আভাস!
শেরপুর ডেস্ক: সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি ফের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ইউনিয়নের পর এবার জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার ১১টি মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি করেছে দলটি। এখন আবারও নতুন করে জেলা পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কর্মসূচির আড়ালে দলটি সমঝোতার পথেই এগোচ্ছে কিনা সেটাই এখন একটি বড় প্রশ্ন হয়ে সামনে আসছে।
উল্লেখ্য যে, ১০ ডিসেম্বর সরকার পতনের ঘোষণা দিয়েছিলো বিএনপি। নেতারা বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর তারা সরকারের পতন করে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে। এর আগে একাধিকবার ঈদের পর চূড়ান্ত আন্দোলনের কথা বলেছিলেন দলের নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কিছুই হয়নি। এর নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দ্বারা ট্রলেরও শিকার হতে হয়েছে বিএনপি নেতাদের। তবে গত ১০ ডিসেম্বর ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা আশা জেগেছিলো।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা মতে, এ বছর ডিসেম্বর হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে হিসেবে এ বছর হচ্ছে নির্বাচনী বছর। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে গেছে। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বিভাগীয় শহরে জনসভা শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আর মাঠের বিরোধী দল বিএনপি সরকার পতনের লক্ষে আন্দোলন করছে। সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে আন্দোলনের মধ্য তা আদায় করা হবে বলে ঘোষণা করেছে বিএনপি।
কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটানোর জন্য বিএনপি হাতে সময় আছে মাত্র এক মাস। আগামী মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে রোজা শুরু হবে। দেশের প্রেক্ষাপটে এ সময় আন্দোলন চালানো সম্ভব নয়। দেশে এ ধরনের নজিরও নেই। এরপর আবার শুরু হবে বর্ষা মৌসুম। পরে বছরের মাঝামাঝি সময় শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিকের পাবলিক পরীক্ষা। সবকিছু মিলিয়ে আন্দোলনের অনুকূল পরিবেশ পাবে না বিএনপি। সেজন্য যা করার তা আগামী এক মাসের মধ্যেই করতে হবে। কিন্তু দলটির এখন যে ধারাবাহিক কর্মসূচি তাতে সেটিও সম্ভব নয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বরং বিএনপি এখন সমঝোতার পথে এগোচ্ছে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন কোনো কোনো রাজনৈতিক মহল। তারা বলছেন, সমঝোতার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও দলটির নিয়মতান্ত্রিক ধারাবাহিক কর্মসূচি সমঝোতাই আলামত দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয় বিএনপি আগামী এক মাসে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে সফল হবে নাকি শেষ পর্যন্ত ২০১৮ নির্বাচনের মতো সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেবে।