দেশের খবর

সবার দৃষ্টি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে

Spread the love

শেরপুর ডেস্ক: আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের (সম্মেলনের) আর ৪ দিন বাকি। দলের প থেকে এবার সাদামাটা কাউন্সিল আয়োজনের কথা বলা হলেও এ নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, কাউন্সিলে সভাপতিম-লীর ১৭টি পদ, সম্পাদকম-লীর ৩৪টি পদ, কোষাধ্যরে ১টি পদ এবং ২৮টি সদস্য পদ; মোট ৮০টি পদের মধ্যে ৪০টির বেশি পদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। তারুণ্য নির্ভর কমিটিতে বাড়বে নারী প্রতিনিধিত্ব। সম্প্রতি শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের কাউন্সিলে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আসায় সবার নজর এখন মূল দলের কাউন্সিলের দিকে। দিন ঘনাচ্ছে, আর কাউন্সিল ঘিরে রাজনীতি সচেতন মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। দলের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র বলছে, এবার একটি পরিচ্ছন্ন ও তারুণ্য নির্ভর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন নতুন নেতৃত্বের হাতে দলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান ও সাবেক নেতা এবং সম্ভাব্য নতুন মুখ যারা, সবার তথ্য-উপাত্ত বিভিন্ন মাধ্যমে সংগ্রহ করেছেন তিনি।
‘নতুন কমিটি কেমন হবে, কারা থাকবেন, কারা বাদ পড়বেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কেউ আসছেন কি না’- গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত নানা খবরের ওপর ভিত্তি করে দেশব্যাপী চলছে আলোচনা, পর্যালোচনা। এদিকে তারুণ্য নির্ভর নতুন কমিটির আভাস পেয়ে সাবেক ছাত্রনেতারা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। সম্মেলনে নেতৃত্বে পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুনদের সুযোগ করে দেয়া হবে, রাজনীতি সচেতন মানুষের পাশপাশি তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরও এমনটাই প্রত্যাশা।
সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে সবার আমলনামা প্রস্তুত আছে। যারা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন, দলে কোন্দল সৃষ্টি করেছেন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, যারা টাকা নিয়ে কমিটি, উপকমিটি দিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে দলের দুর্নাম কুড়িয়েছেন, নিজ স্বার্থে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের দলে নিয়েছেন, বিএনপি-জামায়াত থেকে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন, তাদের সবাইকে শুধু কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে না; রাজনীতি থেকেও দূরে রাখা হবে।
জাতীয় কাউন্সিল সফল করতে শেষ মুহূর্তে এসে দীর্ঘদিনের ঘুনেধরা জেলা কমিটিগুলোর সম্মেলন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের রুটিন তৎপরতায় জেলা-উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলনকেন্দ্রীক রাজনীতি চাঙ্গা হয়েছে। তবে পদ পাওয়া, না পাওয়ার শঙ্কায়, কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ‘গুমট’ পরিবেশ বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র বলছে, প্রভাশালী বেশকিছু নেতার ফাইলে লালদাগ পড়েছে। সহযোগী সংগঠনের অভিযুক্তদের রা করতে জোর তদবির করেছেন, কেন্দ্রীয় এমন কয়েকজন নেতাও প্রধানমন্ত্রীর নেতিবাচক তালিকায় আছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্র বলছে, এবার সম্মেলনে ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। সভাপতি ছাড়া যে কোন পদে নতুন মুখ আসতে পারে। তাই সারাদেশে মূল আলোচনা এখন সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। এ পদে পরিবর্তন আসবে কি না এমন কোন ইঙ্গিত আওয়ামী লীগ সভাপতির প থেকে আসেনি। তবে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র বলছে, নতুন-পুরাতন যিনিই এবার সাধারণ সম্পাদক পদে আসবেন, সংগঠনের উন্নয়ন, অগ্রগতির স্বার্থে তাকে মন্ত্রণালয়ের কাজ থেকে অব্যহতি দেয়া হবে, তবে দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে রাখা হবে। যাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদের সুবিধাদি পায়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ।’ শীর্ষক স্লোগানে আগামী শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন সফল করতে প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করছে ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলে গঠিত ১১টি উপকমিটি। এবার কাউন্সিলের ব্যয় ধরা হয়েছে চার কোটি টাকা। সারাদেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর ও পনের হাজার ডেলিগেটসসহ ৫০ হাজার নেতা-কর্মী কাউন্সিলে উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কাউন্সিল উপলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মঞ্চ এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, এবার কাউন্সিলে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা মূল প্যান্ডেলটি অনেক বড়। এর দৈর্ঘ্য ১৫০ ফুট, প্রস্থ ১৪০ ফুট, উচ্চতা ২৮ ফুট। পেছনে কোনো ব্যানার থাকবে না। মঞ্চ সম্পূর্ণ ডিজিটাল। মোট ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হবে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান। সম্মেলন প্রস্তুতি উপ-কমিটি জানায়, সম্মেলন উপলে দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, পোস্টার ও দাওয়াত কার্ড হয়ে গেছে। অতিথিদের দাওয়াত দেওয়াও শেষ পর্যায়ে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাল তোলা নৌকায় সভামঞ্চ নির্মাণও সম্পন্ন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button
Close