অমিতাভ বচ্চনের হাতে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ
শেরপুর ডেস্ক: অসুস্থ ছিলেন। তাই গত সোমবার জাতীয় পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া হয়নি বলিউড ‘শাহেনশাহ’র। ভারতীয় সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মান তাঁর হাতে তুলে দেওয়া যায়নি। সেই সুযোগ এল রবিবার। রাষ্ট্রপতি ভবনে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনের হাতে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ভারতীয় সিনেমায় আজীবন অবদানের স্বীকৃতিই এই পুরস্কার। এদিন বিগ বি-র হাতে পুরস্কার স্বরূপ একটি স্বর্ণকমল পদক, শাল এবং ১০ ল টাকার চেক তুলে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সম্মানিত হওয়ার পর বক্তব্য রাখতে উঠে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন অমিতাভ বচ্চন।
প্রথমেই এই সম্মানের জন্য তাঁর নাম মনোনীত করায় ভারত সরকার, তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রক এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটির জুরি সদস্যদের ধন্যবাদ জানান তিনি। আরও বলেন, ‘ঈশ্বর আমার প্রতি করুণাময়। আমার বাবা-মার আশীর্বাদ, ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, প্রযোজক সহঅভিনেতাদের সমর্থন আমি সবসময় পেয়ে এসেছি। কিন্তু ভারতীয় দর্শকদের ভালোবাসা এবং নিরন্তর উৎসাহ দানের কাছে আমি সবথেকে বেশি ঋণী। আজ তাঁদের কারণেই আমি এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি।’ এদিন জাতীয় পুরস্কার বিজয়ীদের নিয়ে নিজের বাসভবনে চা-চক্রের আয়োজন করেছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বলিউড ‘শাহেনশাহ’র সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্ত্রী তথা সাংসদ জয়া বচ্চন এবং ছেলে অভিষেক।
১৯৬৯ সালে ভারতীয় সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। কাকতালীয়ভাবে সেই বছরই ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবি দিয়ে বলিউডে পা রাখেন অমিতাভ বচ্চন। সিনেমার যাত্রা শুরু হয়েছিল পরিচালক মৃণাল সেনের ছবি ‘ভুবন সোম’-এ ভয়েসওভার আর্টিস্ট হিসাবে। সিনেমার শুরুতে নেপথ্যে শোনা গিয়েছিল তাঁর সেই বিখ্যাত ব্যারিটোন স্বর। ‘সাত হিন্দুস্তানি’ এবং তারপর বেশ কয়েকটি ছবি ফপ হয়। ১৯৭৩ সালে পরিচালক প্রকাশ মেহরার ছবি ‘জঞ্জির’ প্রথম সাফল্যের মুখ দেখেন বিগ বি। তারপর একে একে ‘দিওয়ার’, ‘শোলে’, ‘মিস্টার নটবরলাল’, ‘লাওয়ারিস’, ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’, ‘অভিমান’, ‘সিলসিলা’ ও আরও অসংখ্য ছবি।
১৯৯০ সালে ‘অগ্নিপথ’ সিনেমার জন্য পান প্রথম জাতীয় পুরস্কার। সেই থেকে আজও নতুন প্রজন্মের নায়কদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বিগ বি। কাজ করেছেন হলিউডে। ‘ব্ল্যাক’, ‘পা’ এবং ‘পিকু’ ছবির জন্য পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। এবছরও তাঁর অভিনীত ‘বদলা’ও দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছে। শুধু সিনেমা নয়, সামাজিক নানা েেত্রও অবদান রেখে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন।
১৯৮৪ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার। ২০০১ সালে পান পদ্মভূষণ। ২০১৫ সালে শিল্পে অবদানের জন্য পদ্মবিভূষণে সম্মানিত করা হয় তাঁকে। পাঁচ দশকের কেরিয়ার আজ ভারতীয় সিনেমা এবং তাঁকে এক সারিতে এনে দিয়েছে।