দেশের কোথাও এখন আর বাঁশের সাকো থাকবে না- পরিকল্পনামন্ত্রী
শিবগঞ্জ(বগুড়া) প্রতিনিধি: পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের কোথাও এখন আর বাঁশের সাকো থাকবে না, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ। একারণে দেশের কোথায় কোথায় বাঁশের সাকো আছে বা সেতুর অভাবে মানুষকে কষ্ট পেতে হচ্ছে তা খুঁজে বের করে সেতু নির্মাণ করা হবে। যেদেশে পদ্মা নদীর ওপরে একাধিক সেতু নির্মাণ হচ্ছে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মিত হচ্ছে সেই দেশে বাঁশের সাকো বা সেতুর অভাবে মানুষ কষ্ট করতে পারে না।
শিবগঞ্জ পৌরসভায় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ৭২টি মিটার দৈর্ঘ্য ও ৪ মিটার প্রস্থের আরসিসির গার্ডার এ সেতু নির্মাণের ভিত্তি স্থাপন উপলে অয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি একথা বলেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় শিবগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিবগঞ্জ পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, জনগণের উপকারে আসে এমন প্রকল্প তাঁর দপ্তরে এলেই তা অনুমোদন করা হবে। তিনি বগুড়ায় একটি বিমানবন্দর স্থাপন এবং করতোয়া নদী খনন সহ উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন স্থানীয় সাংসদ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা হোসনে আরা বেগম, বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের উপাধ্য ডা. রেজাউল আলম জুয়েল, শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা প্রমুখ।
এদিকে সেতুর ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠান উপলে মানুষের ঢল নেমেছিলো উপজেলা সদরে। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু সব বয়সী মানুষ সকল থেকে দলে দলে উপজেলা সদরে সমবেত হতে শুরু করে। কোন বিশেষ উৎসবেও এমন লোকের ঢল নামে না, কিন্তু একটি সেতুর ভিত্তি স্থাপনে সেই ঢল দেখে খোদ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান নিজেও বিস্মিত। তিনি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে উঠে বললেনও সেই কথাটি। মন্ত্রী বললেন, এতো নারী-পুরুষসহ সকল বয়সী মানুষ ছুটে এসেছেন মন্ত্রীকে দেখতে বা তার বক্তৃতা শুনতে নয়, বরং তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা যে পূরণ হতে চলেছে সেই বিষয়টি দেখার জন্যই এতো মানুষ এসেছে।
বহুল কাক্সিত সেই সেতুটি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার অর্জুরপুরে করতোয়া নদীর ওপরে নির্মিত হচ্ছে। আশপাশের ২০ গ্রামের লাধিক মানুষ সেতুটি নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলো। কারণ শিবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে পৌর এলাকার অজুর্নপুর মহল্লা। সেই মহল্লার বাসিন্দাদের বিভিন্নকাজে উপজেলা সদরে আসতে ঘুরতে হয় চার কিলোমিটার সড়ক। এজন্য তারা স্বাধীনতার পর থেকেই রাঙামাটিয়া ও অজুর্নপুরকে বিভক্ত করা করতোয়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই সময় থেকে অনেক জনপ্রতিনিধিই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কেউ সে প্রতিশ্রুতি পুরণ করেননি। এবার সেই সেতু নির্মাণ শুরু হচ্ছে জেনেই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন অর্জুনপুর, ছয়ঘড়িয়া পাড়া, গরীবপুর, আকন্দপাড়া, ধোন্দাকোলা, সন্ন্যাসী ধোন্দাকোলা, দেবীপুর, খালিসপুর, অনন্তপুর, উথলী, রথবাড়ি, নারায়ণপুর, ছোট নারায়ণপুর, বাগমারাসহ ২০ গ্রামের বাসিন্দারা।