হার্ডলাইনে প্রধানমন্ত্রী
শেরপুর ডেস্ক: হার্ডলাইনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের ভেতরের অপরাধীদেরও ধরা শুরু করেছে। সমাজের অসঙ্গতি দূর করে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চায় তারা। এ জন্য দলীয় অপরাধীদেরও ছাড় নয়- নীতিতে এগুচ্ছে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ। তবে এই উদ্যোগকে সবাই সাধুবাদ জানালেও ভেতরে ভেতরে ক্ষোভে ফুঁসছেন অনেকে।
‘চাঁদাবাজির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ করা হয়েছে। যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্তত ৫০০ নেতা টার্গেটে আছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এসব নিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খোদ আওয়ামী লীগ নেতারাও ব্রিবত ও ক্ষুব্ধ।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে ‘চাঁদাবাজি’সহ নানা অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রী। পরে ১নং সহ-সভাপতিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ১ নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই বৈঠকেই যুবলীগের কিছু নেতার কার্যকলাপ নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ওরা শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ।’ এ সময় সরকারের ভাবমূর্তিক্ষুুন্ন হয় এমন কর্মকান্ডে কাউকে ছাড় না দেয়ার কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বেশ কয়েকটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব। নগদ টাকা, বিপুল পরিমাণ জুয়ার সরঞ্জাম ও বিদেশি মদ উদ্ধারের পাশাপাশি দেড় শতাধিক লোককে আটক করা হয়। ওই দিনই সন্ধ্যায় গুলশানের বাসা থেকে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দেিণর সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স কাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ‘সারাদেশে অপরাধে জড়িত প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর তালিকা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির হাতে রয়েছে। এরা দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস সহ নানা অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের বিষয়ে একে একে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।’
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার গণভবনে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী ও সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ সহ নেতাদের কিছু অংশ এই ধরপাকড়কে স্বাগত জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, ‘দরকার আছে। এমন শুদ্ধি অভিযান হলে সরকারে আস্থা বাড়বে মানুষের। জনপ্রিয়তা বাড়বে।’ অনেকে বলছেন, ‘সব কিছুরইতো সীমা আছে, লাগাম টেনে ধরাটাই যুৎসই।
আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন। যেকোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’