শেরপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কাদেরের দুর্নীতির বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
ষ্টাফ রির্পোটার: বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার দাবীতে উপজেলা কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারী) বেলা ১১ টায় বগুড়ার শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখর লাল কুন্ডু লুদু।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা হিসাবে নিজ উপজেলায় দায়িত্ব নেবার পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন ছাপা হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ডা. আব্দুল কাদের অফিস প্রধান হিসাবে ক্যাম্পাসে থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি বগুড়ায় থাকেন। সরকারি বরাদ্দকৃত জীপ গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। তার অবহেলায় হাসপাতালের বর্হিবিভাগ অন্তবিভাগ ও জরুরী বিভাগের রোগীরা চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বঞ্চিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের সরকারি ঔষধ বাহিরে বিক্রির অভিযোগ আছে। জরুরী বিভাগে ডা. আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে ইনচার্জ গোলাম গোলাম মুর্তজা একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে অবৈধভাবে বিভিন্ন রোগীর নিকট থেকে সেলাই করা, সেলাই কাটা সহ নানা কাজে টাকা আদায় করেন। এছাড়া হাসপাতালের ইনজুরি সার্টিফিকেট বাণিজ্য, প্রশিক্ষণ ভাতা থেকে চাঁদা আদায়, হারবাল বাগানের নামে টাকা লুটপাট, ডেংগুজ্বরে চিকিৎসায় বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাত, রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শেখর লাল কুন্ডু লুদু আরও বলেন শেরপুর শহরের সুশান্ত কুমার রায় (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী গত ২ জানুয়ারী রাতে অসুস্থবোধ করলে সে পায়ে হেঁটে শেরপুর হাসপাতালে যায়। কিন্তু সেখানে কোন দায়িত্বশীল চিকিৎসক না থাকায় জরুরী বিভাগের এক কর্মী তাঁকে একটি ইনজেকশন পুশ করে। এতে তার অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে থাকলে তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সুশান্ত কুমার রায়কে বগুড়া নেয়ার পথে সে মারা যায়।
ডাঃ আব্দুল কাদের শেরপুর সরকারি হাসপাতালের রোগীদের ২০১৯-২০২০ সালের পথ্য সরবরাহের জন্য গত ৬ অক্টোবর ১৯ তারিখে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গোপনে দরপত্র আহবান করেন। দরপত্র বাক্স খোলা হয় ২৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে যা দরপত্র দাতাদের নোটিশ মারফত জানানো হয় নাই। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন চলতি জানুয়ারী/২০২০ মাসে। এতেই বোঝা যায় যে, ডাঃ আব্দুল কাদের অনৈতিক সুবিধা লাভের আশায় সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে বিলম্ব করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডা. আব্দুল কাদের তার অনিয়ম ও দুর্নীতি আড়াল করতে গত ১৩ জানুয়ারী সোমবার শেরপুর থানায় বগুড়া জেলা কেমিষ্ট্র এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি মো. রফি নেওয়াজ খান রবিনের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন জিডি করেছেন এবং ১৫ জানুয়ারী বুধবার তার নিজ চেম্বারে সংবাদ সম্মেলন করে বগুড়ার জনপ্রিয় ব্যক্তি গাবতলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও বগুড়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে রবিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং ডা. আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে সঠিক বিচারের আহবান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে, বাংলাদেশ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতি শেরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোকারিম হোসেন রবি, সহ সভাপতি মোকাল্লেম হোসেন, আকরাম হোসেন, শ্যামল কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করাকে কেন্দ্র করে আমাকে হুমকি দেয়া অব্যাহত আছে। আমাকে ফাঁসানোর জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে। তাই সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।