বগুড়ায় দিনব্যাপী পালিত হলো পিঠা উৎসব
মাঘের এলানো সকালে কুয়াশা ভেদ করে সূর্য যখন দেখা দিলো, তখনো শীত একটা আদরমাখা পরশ হয়ে জড়িয়েছিল সকলের পোশাকে। আড়মোড়া ভেঙে নাগরিক ছুটিতে সকালে মানুষ জড়ো হয়েছিল টিটু মিলনায়তন চত্বরে।
ভোর হলো এবং লিটল থিয়েটারের আয়োজনে ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, বগুড়া থিয়েটার, কলেজ থিয়েটারের সহযোগিতায় অষ্টাদশ বারের মত শুক্রবার পালিত হলো দিনব্যাপী পিঠা উৎসব।
বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতিতে পিঠা অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। শীতকাল এলেই পিঠা উৎসবে মাতোয়ারা হয় দেশবাসী। এই ঋতুটি যেন পিঠা খাওয়ার উপযুক্ত সময়।শহুরে ব্যস্ততার কারণে পিঠার স্বাদ নিতে নগরজীবীদের কেউ গ্রামে গিয়ে পিঠা খেয়ে আসতো। গ্রাম থেকে শহরে বসবাসকারী প্রিয়জনদের জন্য পিঠা তৈরি করে পাঠাতো কেউ কেউ। কিন্তু এখন সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্যপটও আমূল বদলে গেছে। এখন গ্রামের মত শহরেও শীতের সব ধরনের পিঠা পাওয়া যায়।
গ্রামাঞ্চলে শীত নিবারণের জন্য ঘরের কোনে যে আইলা জ্বালানো হয় সেই আইলা প্রজ্জ্বালন করে শুভ উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মকবুল হোসেন। উদ্বোধনি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জনাব ফয়েজ আহাম্মদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন লিটল থিয়েটারের পরিচালক তৌফিক হাসান ময়না, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সিদ্দিকী। এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রদীপ ভট্টাচার্য শঙ্কর, মাটিডালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া, বগুড়া ইয়্যুথ কয়্যারের সভাপতি লায়ন আতিকুর রহমান মিঠু, বগুড়া থিয়েটারের সহ সভাপতি পলাশ খন্দকার,টিপু সুলতান প্রমুখ। আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল রশিদ রাজা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মঞ্চশিল্পী অলক পাল।
নানা সাধের পিঠা নিয়ে পশরা সাজিয়ে বসেছে বগুড়ার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মাটিডালী উচ্চ বিদ্যালয়, ফয়েজুল্বা উচ্চ বিদ্যালয়, ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইচ্ছে তুলি আর্ট গ্যালারি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইউনিক পাবলিক স্কুল, এ.কে. আজাদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভান্ডারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, টিএমএসএস দাখিল মাদ্রাসা, মর্নিং বেল স্কুল, ওয়াইএমসিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল।
বাহারি সাধের পিঠার যেমন- পাটিশাপটা, বউ সোহাগি, দুধ কুশলি, ভাপা, কুশলি, ঝাল কুশলি, আন্দেশা, শাহি, মন মোহন, খাস্তা, হেই, মোহনমতি, ত্রিরতœ, চিতই নকশি, খেজুর, ক্ষীরপুলি, ডিমপিঠা, নোনাশ, চিংড়ি, জামাই, লাভ, পুলি, তিল, বকুল, ফুল, নাট, খোড়মা, ইত্যাদি দাম দর্শনার্থীদের নাগালের মধ্যে। দাম ১০ থেকে ৫০ টাকা। আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, বগুড়া ১ আসনের মাননীয় সাংসদ জনাব আব্দুল মান্নানের গুরুতর অসুস্থতাজনিত কারণে পিঠা উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কে বাদ রেখে পিঠা উৎসব পালিত হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি