বগুড়ায় হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের মারপিটের অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধার
বগুড়া সংবাদদাতা: বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) রোগী সহ মুক্তিযোদ্ধা ও স্বজনদের মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বগুড়া সদরের ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন (৬৭) নামে রোববার দুপুরে বগুড়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত শুক্রবার সকালে তার স্ত্রী মাজেদা ইয়াসমিন জোসনাকে (৫৫) বুকে ব্যথার কারণে শজিমেক হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করান। সেখানে সিসিইউ বেড নং-০৩ এ চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার বিকেলে সেখানকার দায়িত্বরত দুজন ডাক্তার তার অসুস্থ স্ত্রীকে বেড ছেড়ে দিয়ে বাহিরে ফ্লোরে যেতে বলেন। খবর পেয়ে বিকেল ৪ টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন হাসপাতালে গিয়ে বেড ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানতে চান।
এ সময় ছাড়পত্র নিয়ে বেড ছাড়ার কথা বললে দায়িত্বরত ডাক্তাররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে গ্রিলের দরজা বন্ধ করে দিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে রেখে মোবাইল ফোনে ১০/১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডেকে এনে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিনকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। সে সময় অসুস্থ স্ত্রী মাজেদা পারভিন ও শ্যালক জাহিদুর রহমান এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারপিট করে। এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করতে ধরলে মেয়ে মাসুমা আকতারকেও মারপিট করে মোবাইল কেড়ে নেয়।
খবর পেয়ে তার দুই ছেলে মাজেদুর রহমান (৩১) ও মোকসেদুর রহমান (২৫) দ্রুত হাসপাতালে পৌছালে পুনরায় ২০/২৫ জন ইন্টার্ণ চিকিৎসক মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের সামনে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় পুলিশ সদস্যরাও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। সে সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেখানে ভাঙচুর করে। সন্ধ্যার পর সদর থানা পুলিশ সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে স্ত্রী মাজেদা পারভিন অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেয়ার কথাও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আসা মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিনের ছেলে মাজেদুর রহমান জানান, শজিমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা কসাই। এরা চিকিৎসার নামে ব্যবসায় নেমেছে। টাকার বিনিময়ে বেড ভাড়া দেওয়ার জন্য এরা বেড ছেড়ে দিতে বলেছে। তাদের হাতে কেউ নিরাপদ নয়। তুচ্ছ ঘটনায় এরা চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বগুড়া মেডিক্যাল ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল আজিজ মন্ডল জানান, একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ দিকে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা.আব্দুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের জানান, রোগীর লোকজনদের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মাত্র। কোনো মারপিটের ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবী করেন।