দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ প্রস্তাব
শেরপুর ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দণি এশিয়ার বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনায় ৪ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া সংঘবদ্ধ, বন্ধত্বপূর্ণ ও প্রতিযোগিমূলক অঞ্চল হিসেবে পারস্পরিক বৈশ্বিক কল্যাণে অন্যান্য অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) নয়াদিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনোমিক সামিটের সমাপনী অধিবেশনে এসব প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত কয়েক দশকে আমরা অনেক মহৎ আঞ্চলিক বিভিন্ন ধারণা ও উদ্যোগ দেখেছি। এগুলোর মধ্যে কিছু সফল হলেও অন্যগুলো সফল হয়নি। আগামী কয়েক দশকের দিকে দৃষ্টি রাখলে আমি মনে করি যে এেেত্র আমাদের কিছু নীতিমালা মেনে চলা উচিত হবে। চারদফা প্রস্তাব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার দৃষ্টিতে আগামী দশকগুলোর জন্য নিম্নোক্ত চিন্তা-ভাবনা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
প্রথমত, আমাদের সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য শান্তি স্থিতিশীলতা ও সৌহার্দ্য নিশ্চিত করার ল্েয প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। সংখ্যাগুরুও সংখ্যালঘুর মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যুগ যুগ ধরে বহুত্ববাদ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি। এর মাধ্যমে আমরা ধর্ম, জাতি ও ভাষাগতভাবে দণি এশিয়ার বৈচিত্র্যের উদযাপন করতে পারে। এটি হচ্ছে মৌলিক বিষয়।
দ্বিতীয়ত, দ্রæত প্রবৃদ্ধির সময়ে সমাজে যেন বৈষম্য আরো বেড়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। সম্পদ হতে হবে অন্তর্ভুক্তমূলক এবং তা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছতে হবে। স্বল্পোন্নত সম্প্রদায় বা দেশ পিছনে পড়ে থাকবে না। যুবকদের আকাংা ও চাহিদা অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।
তৃতীয়ত, দণি এশিয়ায় আমাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দতা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে অন্যদের হাত ধরতে হবে। সম্প্রদায় ও দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা হচ্ছে চাবিকাঠি। ভ্রান্ত ধারণা থেকে ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’ এই দৃষ্টিভঙ্গি সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে সহায়তা করছে। আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজের জন্য এ ধরনের সহযোগিতাপূর্ণ সংস্কৃতি প্রয়োজন।
চতুর্থত, আমরা অবশ্যই বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ন্ত্রণ করবো। জনগণের স্বার্থে ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক বাস্তবতার আমরা প্রশংসা করবো। আমরা স্বল্প মেয়াদি লাভের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি স্বার্থ বন্ধ করে দিতে পারি না।’
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দণি-পূর্ব এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সংযোগ প্রতিষ্ঠার ওপর অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে ও এশিয়ান রেলওয়ে প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, বান্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দেখা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে ুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দেশ স্বাধীন করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর সরকারের গৃহীত পদপে সমূহ তুলে ধরেন।
সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্য বিমোচন ও সহযোগিতা বিনিময়ের মাধ্যমে এ অঞ্চলকে আরো শক্তিশালী করার জন্য একযোগে কাজ করতে শেখ হাসিনার ধারণার প্রশংসা করেন। খবর: বাসস।