১০০ টাকার জন্য বড় ভাইকে হত্যা!
আজকের শেরপুর ডেস্ক: মাত্র ১০০ টাকার জন্য আপন বড় ভাইকে ইট দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেণ ছোট ভাই। হত্যার পর ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যান। খিপ্ত হয়ে বড় ভাইকে হত্যা করেছেন বলে ঘাতক ছোট ভাই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের স্বীকার করেছে। আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দীও দিয়েছেন। গত ৭ মে উত্তর মুগদা এলাকায় জীবন ফুট ফ্যান্টাসি নামে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে জীবন চন্দ্র ঘোষের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বেশ বিপাকেই পড়ে। আশেপাশের সিটি ফুটেজ সংগ্রহ করে ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা করে।
সবুজবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রাশেদ হাসান জানান, ৭ মে উত্তর মুগদার জীবন ফুড ফ্যান্টাসি রেস্টুরেন্ট থেকে জীবন চন্দ্র ঘোষের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ওই দিনই মুগদা থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এটি একটি ক্লুলেস হত্যা মামলা। আমরা ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও অন্যান্য টেকনিক্যাল পদ্ধতি প্রয়োগ করে আসামী সনাক্ত করে আদালতে সোপর্দ করতে সক্ষম হয়েছি। আসামীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছোট ভাই যদিও বলছেন তিনি হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করেননি । তাদের বাবার নারায়ন ঘোষ
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুগদা থানার এসআই রাহিদুল ইসলাম জানান, তদন্তের এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন ওই রেস্টুরেন্টটি নিহত জীবন চন্দ্র ঘোষ ও তার ছোট ভাই রাজীব চন্দ ঘোষ মিলে চালাতেন। ক্যাশ কাউন্টারে অধিকাংশ সময় রাজিব দায়িত্ব পালন করতেন। রেস্টুরেন্ট পরিচালায় বেতন ভাতা ছাড়া প্রতিদিন বড় ভাই জীবনের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে ব্যক্তিগত খরচ পেতেন। এসআই রাহিদুল জানান, ঘটনার দিন ছোট ভাই রাজিব বড় ভাই জীবনের কাছে ৫০ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা চান। অতিরিক্ত ৫০ টাকা বেশি চাওয়ায় তা দিতে রাজী হননি জীবন চন্দ্র ঘোষ। এতে খিপ্ত হয়ে যান রাজীব চন্দ্র ঘোষ। ৫০ টাকার জন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে যায়। এক পর্যায়ে বড় ভাই জীবন চন্দ্র ঘোষ মাটিতে পড়ে গেলে রাজীব ইট দিয়ে তার মাথায় জোরে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই জীবনে মৃত্যু হয়। জীবন মারা যাওয়া দিশে হারা হয়ে পড়েন রাজীব। কি করবে বুঝতে না পেরে সে লাশ হোটেলের মধ্যে রেখেই দোকান বন্ধ করে দিয়ে চলে যান। এরপর স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে থাকেন। এদিকে জীবন চন্দ্র বাসায় না ফেরায় দোকানে গিয়ে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন বাবা। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। কিভাবে হত্যাকান্ড ঘটেছে তা নিয়ে নিহতদের স্বজনরাও স্পষ্ট করে কিছু বলছিলো না।
তদন্ত সংশ্লিস্ট কর্মকর্তা বলেন, নিহতের ছোট ভাই রাজিব চন্দ্র ঘোষের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং এক পর্যায়ে তিনি হত্যার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।এরপর রাজিবকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করলে হত্যার সঙ্গে নিজের জড়িত হওয়ার কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।